বর্তমান ও আগামীর মীরসরাই

এম আলাউদ্দীন

আমাদের প্রাণের মীরসরাই! বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামের প্রবেশদ্বার পূর্বে পাহাড় আর পশ্চিমে সমুদ্র অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা আমাদের মীরসরাই। বিধাতা যেন মনের মাধুরী দিয়ে সাজিয়েছেন নিজ হাতে। এখানকার পরিবেশ, শিক্ষা, সংস্কৃতি, খেলাধুলা সাহসিকতায় রাজনৈতিক সামাজিকভাবে দেশের অন্যসব যায়গা থেকে অনেক বেশি সমৃদ্ধ। এই উপজেলা দুটি থানা, দুটি পৌরসভা, ষোলটি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত পাঁচ লাখ লোকের আবাস ভূমি।

প্রথমেই আসা যাক- দেশে কাঠামো গড়ার কারিগর শ্রদ্ধার আসনে যাঁরা বসে আছেন তাঁদের কথায়। এ মীরসরাইতেই আছেন সর্বাধিক মুক্তিযোদ্ধা। আর কোনো অঞ্চল থেকে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের ডাকে এতো কিশোর-যুবক যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন কি-না আমার জানা নেই। এরপর প্রকৃতির অতুলনীয় আশীর্বাদ মহামায়া ইকোপার্ক। যা এখন পাহাড়, ঝর্ণা, লেকের মেলবন্ধনে অপূর্ব এক দর্শনীয় স্থান। মহামায়া ছাড়াও মীরসরাইতে আছে ৩৬টা ছোট-বড় ঝর্ণা। অগণিত ট্রেইল নিয়ে রূপসী ঝর্ণা, খৈয়াছড়া ঝর্ণা, বোয়ালিয়া ঝর্ণা। বছরের প্রতিদিন সারাদেশ থেকে এই প্রাকৃতিক ঝর্ণা দেখতে পর্যটক আসে।

নতুন করে সংযুক্ত হলো বঙ্গবন্ধু শিল্পনগর; দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ শিল্পাঞ্চল। যেখানে নৌ বন্দর হয়েছে। যেকারণে শিল্পোন্নয়নের একধাপ এগিয়ে গেছে এই জনপদ। হয়েছে শেখ হাসিনা অ্যাভিনিউ, হয়েছে শেখ হাসিনা সরোবর। অতিমারি করোনার কারণে দুই-তিন বছর পিছিয়ে গেলেও এখন শিল্পনগরে পুরোদমে কাজ চলমান। প্রায় ত্রিশ হাজার একর জমিতে এটা নির্মিত হচ্ছে। ইতিমধ্যে চালু হয়েছে প্রায় ছয়টি কারখানা। বড়তাকিয়া সীতাকু- থেকে শিল্পাঞ্চলে লোকজনের যাতায়াত ব্যবস্থা উন্নত করতে চালু হয়েছে ডাবল ডেকার বাস। আশার কথা হচ্ছে, শিল্পাঞ্চলে সকল প্রতিষ্ঠান চালু হলে প্রায় ত্রিশ লাখ লোকের কর্মসংস্থান হবে এখানে। বিমানবন্দর, রেললাইন, অত্যাধুনিক হাসপাতাল, উন্নত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, পাঁচ তারকা হোটেলসহ চলছে উন্নত বিশ্বের আদলে আধুনিক নগরী তৈরির মহাযজ্ঞ। যা বহুমুখী পরিকল্পনা ধরে এগিয়ে যাচ্ছে।

২০৪১ সালের মধ্যেই হবে স্মার্ট বাংলাদেশ। যা বিশ্বের ধনী দেশের কাতারে গণ্য হবে! সেদিন বেশি দূরে নয়। সেই স্মার্ট বাংলাদেশের অর্থনীতির মূল কেন্দ্রবিন্দু হবে আমাদের প্রাণের মীরসরাই। সারাবিশ্ব একদিন জানবে এই মীরসরাইয়ের নাম। প্রতিদিন আসবে দেশ-বিদেশের হাজার হাজার মানুষ। কেউ কর্মজীবী, কেউ ব্যবসায়ী আর কেউবা পর্যটক।

আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি- এসবের পেছনে যাঁর সবচেয়ে বেশি অবদান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি। কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি প্রিয় মোশাররফ ভাইয়ের প্রতি যিনি এসব স্বপ্ন দেখেছেন ও বাস্তবায়ন করেছেন। কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি ইঞ্জিনিয়ার মাহবুবুর রহমান রুহেল এম পি মহোদয়ের প্রতি যিনি দৃঢ়চিত্তে এই বিশাল কর্মযজ্ঞের অসম্পূর্ণ কাজ সম্পূর্ণ করার দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন।

লেখক : ভাইস চেয়ারম্যান, মীরসরাই উপজেলা পরিষদ