ইসলামের সংস্কৃতি ও সভ্যতার তুলে ধরতে ৫ বছর আগে সংযুক্ত আরব আমিরাতে তৈরি করা হয় কোরআনিক পার্ক। দেশটিতে ঘুরতে আসা পর্যটকদের কাছে অন্যতম আকর্ষণের জায়গা এখন দুবাইয়ের এই পার্কটি। দুবাইয়ের কৃষি কেন্দ্র হিসেবে খ্যাত আল খাওয়ানিজ এলাকায় এটি নির্মাণ করা হয়। এই প্রকল্পের কাজ শেষ হয় ২০১৯ সালের মার্চ মাসে। ৬৪ হেক্টর জায়গায় নির্মিত এই প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছিল প্রায় ৪৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। পবিত্র কোরআনে বর্ণিত নানা ঘটনার আদলে তৈরি এই পার্কে এখন শোভা পাচ্ছে ইসলামের সংস্কৃতি ও সভ্যতার সঙ্গে জড়িয়ে থাকা নানা ঘটনার বর্ণনা, লোহিত সাগরে বিচ্ছেদের প্রতীক ও বিভিন্ন প্রজাতির গাছপালা।
জানা গেছে, বিভিন্ন সংস্কৃতি, ধর্ম এবং মানুষের বুদ্ধিবৃত্তিক ও সাংস্কৃতিক যোগাযোগের সেতুবন্ধন তৈরি করাই ছিল এই পার্ক নির্মাণের লক্ষ্য। এ ছাড়া বাস্তুবিদ্যার ক্ষেত্রে ইসলামের অর্জনগুলো প্রদর্শন করাও ছিল এই পার্কের প্রধান উদ্দেশ্য।
পার্ক ঘুরে দেখা গেছে, থ্রিডি’র সাহায্যে পবিত্র আল কোরআনে বর্ণিত বিভিন্ন ঘটনার বর্ণনা, নানা প্রজাতির উদ্ভিদ, ফলজ ও ঔষধি গাছ শোভা পাচ্ছে এখানে। পার্কের ভেতরে ১২টি বাগান রয়েছে। গ্রিন হাউজের মাধ্যমে যেখানে কোরআনে উল্লেখিত প্রায় ৫১ প্রজাতির উদ্ভিদ রাখা হয়েছে। বর্ণনা রয়েছে এসব গাছের প্রকারভেদ, খাদ্য ও ঔষুধি গুণ সম্পর্কে। কোরআনের বর্ণনার আবহে একটি গুহাও নির্মাণ করা হয়েছে এখানে। অলৌকিক গুহার আদলে তৈরি করা এই কৃত্রিম গুহায় কোরআনে উল্লেখিত নানা ঘটনা নিয়ে আলাদা আলাদা ভিডিও প্রদর্শন করা হচ্ছে। অলৌকিক গুহা ছাড়াও গ্লাস হাউজ ও লোহিত সাগরের বিচ্ছেদের প্রতীক নির্মাণ করা হয়েছে পার্কে। যা মুসলমানদের বিভিন্ন ঘটনা প্রবাহের সাক্ষ্য দিচ্ছে।
দুবাই বিমানবন্দর থেকে মাত্র ১৮ কিলোমিটার দূরে হওয়ায় দেশটির অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র হয়ে উঠেছে পার্কটি। কাল্পনিকভাবে সাজানো এই বাগানের চারপাশে হাঁটার ব্যবস্থা থাকায় প্রতিনিয়ত ভিড় করেন স্থানীয়রা। কুরআনিক পার্কটি প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকে। পার্কে বিনামূল্যে প্রবেশের সুযোগ থাকলেও অলৌকিক গুহা ও গ্লাস হাউজ যেতে গুণতে হয় ৫ দিরহাম।